Download

মঙ্গলবার, ২৪ মার্চ, ২০১৫

"ফটিক যখন মেডিকেলের ছাত্র..." ছুটি (Medical Version)

from :https://www.facebook.com/si.shovon.5?fref=nf
…………ফটিককে মামা জিজ্ঞাসা করিল,
'কি রে মেডিকেল এ পড়বি?' ফটিক লাফ
দিয়ে উঠিয়া বলিল,'পড়ব।' মেডিকেল এ
পড়িবার নিমিত্তে ফটিক নাক-মুখ
কষিয়া পড়িতে লাগিল এবং মেডিকেল এ
চান্স
পাইয়া গেল। নাচিতে নাচিতে ফটিক
মেডিকেল
পড়িতে চলিল।
ছোটভাই মাখন হিংসায়
জ্বলিয়া পুড়িয়া বলিল,'মেডিকেল,এ আর
এমন
কি? ভারী তো একটা বিষয়। আমি এর
থেকেও
ভালো কিছুতে পড়িব।' মাখনের মাতা
ছেলের
এহেন ইচ্ছা শুনিয়া তাহার
গল্লপ্রদেশে কষিয়া চুম্বন
দিয়া বলিল,'মাখন,আমারখাসা ছেলে।'
মাখনের
মাতার মনে শঙ্কা ছিল কোনদিন ফটিক
মাখনকে জলেই ফেলিয়া দেয় কি মাথাই
ফাটায়।
জগতে মেডিকেল পড়ুয়া ছাত্রদের মত
বালাই
আর নাই। ভার্সিটি নামক প্রতিষ্ঠানের
অধীনে মেডিকেলে পড়িলেও স্যারদের
অতিরিক্ত নিয়ম-কানুনের
কারনে তাহারা না বোর্ডিং স্কুলের
ছাত্র,
না ভার্সিটির। টার্ম ভাইভার টেবিলে
তাহাদের
মুখে আধো আধো উত্তর ন্যাকামি,
বেশি পারাও জ্যাঠামি। ফটিক
মনে মনে বুঝিতে পারে মেডিকেলে ঠিক
যেন
সে খাপ খাওয়াইতে পারিতেছে না।
তাহার
মুক্ত হৃদয় মেডিকেল এর আইটেম,কার্ড,টার
্ম,প্রফ এর খাচায় বদ্ধ হইয়া ছটফট
করিতে লাগিল। টার্ম ভাইভাতে প্রশ্নের
উত্তর না পারিয়া মাথা নীচু করিয়া
থাকিত।
ইহার মধ্যে ফটিক সাপ্লি খাইয়া বসিল।
একে তো পড়া করিতে পারে না তাহার
উপর
সাপ্লি খাইয়া সে একদম নাচার হইয়া
পড়িল।
ভয়ে ভয়ে স্যারের
কাছে গিয়া বলিল,'সাপ্লি খাইয়াছি।'
স্যার
অধরের দুই প্রান্তে বিরক্তি রেখা অঙ্কণ
করিয়া বলিল,'বেশ করিয়াছ। তোমার
জন্যে মাসের মধ্যে পাঁচবার শর্ট টার্ম
পরীক্ষা তো আর নিতে পারি নে।'
ফটিক ক্যালেন্ডারের
পাতা দেখিয়া বাড়ি যাইবার দিন
গুনিতে লাগিল।
ছুটির দিন আগাইয়া আসিতে লাগিল।
ফটিকের
রুদ্ধ প্রাণে ছুটির হাওয়া লাগিতে লাগিল।
আনন্দের আতিসয্যেই হোক কিংবা টিকিট
না পাওয়ার চিন্তায় হোক ফটিক ছুটির
কয়েকদিন আগের তারিখে বাসের টিকিট
কাটিয়া ফেলিল। পরের দিন
ক্লাসে গিয়া শুনিতে পারিল
সে যে দিবসে বাসের টিকিট
কাটিয়াছে সে দিবসেই স্যার টার্ম
সাপ্লির
তারিখ দিয়াছে। শুধু তাহাই নয় ভাইভার
তারিখও বাধিয়া দিয়াছেন। ফটিকের
এতদিনের আশা এক নিমেশেই
গুড়িয়া যাইতে লাগিল।
তাহার মাথার Blood Vessels
ছিড়িয়া যাইতে লাগিল। ... বুকের ভিতর
Stress
বাড়িয়া যাইতে থাকিল। অবশেষে ব্লাড
প্রেসার কমিয়া গিয়া ফটিক শকে(Shock)
চলিয়া গেল। সে সহসাই মাটিতে পড়িয়া
গেল।
বন্ধুরা ধরাধরি করিয়া তাহাকে
মেডিকেলের
ইমারজেন্সিতে লইয়া গেল।
পরেরদিন দিনের বেলায় কিছুক্ষনের জন্য
সচেতন হইয়া ফটিক কাহার প্রত্যাশায়
ফ্যালফ্যাল করিয়া চারিদিকে চাহিল।
ব্যাচের
এক বন্ধু নিজের সাপ্লি এর
পড়া করিতে ব্যস্ত রইয়াছে।
ফটিককে সে দেখিতে পারে নাই। তাহার
পরদিন
কাটিয়া গেল। ফটিক ভাল ছাত্রদের মত
করিয়া বলিতে লাগিল, “ আমাকে পাশ
করিতেই
হইবে।আমাকে ডাক্তার হইতেই হইবে।...........
"And I have promises to keep.And
miles to go before I sleep.And miles
to go before I Sleep.”
সাপ্লি খাইয়াছিল বলিয়া ফটিক এসব
মনে মনে ভাবিয়াছিল। এখন জ্বরের
ঘোরে পড়িয়া ফটিক তাহাই প্রলাপ
বকিতে থাকিল কিন্তু যাঁহারা এই এই
মেডিকেলে পড়াইয়া থাকেন
তাহারা নিজেরা ছাত্রদের mental well
being লইয়া গুরুত্ব দেন কিনা মেডিকেল
হাস্পাতালের বেডে শুইয়া ফটিক তাহার
কূল-
কিনারা করিতে পারিতেছে না।
এমন সময় ফটিকের
মাতা ঝড়ো বেগে ঘরমধ্যে প্রবেশ করিলেন।
ফটিকের মস্তকের পাশে বসিয়া ডাকিলেন,
'ফটিক,বাপধন আমার।' ফটিক
কাহাকে লক্ষ্য না করিয়া মৃদুস্বরে
কহিল,'মা!
এখন আমার ছুটি হয়েছে মা,এখন
আমি বাড়ি যাচ্ছি,মা।
_________________________
'ছুটি' গল্প অবলম্বনে এবং ফটিকের
ইঞ্জিনিয়ারিং ভার্সন অনুকরণে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন